পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসলো, এক বিন্দুতে মিলিত হলো দুই তীরের মানুষ
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদ্মা সেতুর (৪১ তম) শেষ স্প্যানটি বসানো হলো। মিলিত হলো খরস্রোতা পদ্মার দুই পাড়। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো পুরো পদ্মা সেতুর অবকাঠামো।
পদ্মায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু গড়বে নতুন এক দিগন্ত। গতকাল ভাসমান বড় ক্রেনে শেষ স্প্যানটি উঠিয়ে ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির কাছাকাছি স্থানে নিয়ে রাখা হয়।
সর্বশেষ স্প্যানটি স্থাপনের মাধ্যমে পদ্মার দুই পাড় মাওয়া ও জাজিরা যুক্ত হয়। ঘন কুয়াশার কারণে সর্বশেষ স্প্যান খুঁটিতে বসানোর কাজটা কিছুটা কঠিন হয়। এ জন্য আগেই খুঁটির কাছে নিয়ে রাখা হয়। মাওয়ার কুমারভোগের নির্মাণমাঠে যেখানে স্প্যান প্রস্তুত করা হয়, সেখান থেকে এটি বসানোর খুঁটি খুব বেশি দূরে নয়।
এদিকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে শেষ স্প্যান বসানোর ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদ্?যাপন করা হচ্ছে না। আগে থেকেই সব কর্মসূটি বাতিল করেছে সেতু বিভাগ। ফলে আজ অনেকটাই অনাড়ম্বরভাবেই স্প্যান তোলার কাজ সম্পন্ন হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা নিয়ে আগামী শুক্রবার সেতু ভবনে সভা করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেখানেই তিনি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন। এর আগে স্প্যান তোলার মুহূর্তটি সেতু ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করার কথা ছিল সেতুমন্ত্রীর।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শেষ মুহূর্তে সেটিও বাতিল করা হয়েছে বলে সেতু বিভাগ সূত্র জানায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সে হিসেবে ৩ বছর ২ মাস ১০ দিনে বসানো হচ্ছে সেতুর সব ক’টি স্প্যান। বন্যা, নদীভাঙন, চ্যানেলে নাব্য সংকট, করোনাভাইরাস মহামারিসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে একে একে ৪০টি স্প্যান বসানো হয়।
গত ৪ঠা ডিসেম্বর ৪০তম স্প্যান বসানো শেষ হওয়ায় এখন শেষ স্প্যানটি বসলেই মিলিয়ে যাবে নদীর এপার-ওপার। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ।