তুরস্ক-গ্রিসের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তুরস্ক ও গ্রিসের অ্যাজিয়ান সাগর উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। বিধ্বংসী এ ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন নয় শতাধিক মানুষ।
শুক্রবার এজিয়ান সাগর থেকে তুরস্ক ও গ্রিসে আঘাত হানে শক্তিশালী এক ভূমিকম্প। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ার ৩৪ ঘণ্টা পর রোববার ৭০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান রোববার জানান দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমিরে আঘাত ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৮। এ ছাড়া ভূমিকম্পে আঘাত হানার দিনই গ্রিসের সামোস দ্বীপে দুই শিশু প্রাণ হারায়। এ ছাড়া শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে সামোসের অন্ততপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছেন।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এএফএডি) জানিয়েছে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৬। তবে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায় যে তুরস্কের ইজমির প্রদেশের উপকূলে আঘাত হানা ভূমিকম্পটি ৭ মাত্রার ছিল।
তুরস্ক এবং গ্রিস উভয় দেশই ‘ফল্ট লাইনের’ ওপর অবস্থান করায় ওই অঞ্চলে প্রায়শই ভূকম্পন অনুভূত হয়। তবে এবারের ভূমিকম্পের তীব্রতা অনেক বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গ্রিসের সামোস দ্বীপে সুনামিতে বন্যা এবং বাড়িঘর ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। দ্বীপটিতে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
শুক্রবার বিকেলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর রোববারও উদ্ধার অভিযান চলছে। ভূমিকম্পে তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরের অনেক ভবন ধসে পড়ে। ইজমিরের বেরকালি জেলার একটি ধসে পড়া ভবন থেকে ওই বৃদ্ধাকে আজ জীবিত উদ্ধার করা হয়। গতকাল তিন শিশুসহ এক মাকেও উদ্ধার করা হয়েছিল।
তবে জীবিত মানুষের চেয়ে প্রতিদিন অনেক মরদেহ উদ্ধার হচ্ছে। তবে ভূমিকম্পের মাত্রা নিয়ে কিছু বিতর্কও তৈরি হয়েছে। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭। এদিকে ইস্তাম্বুলের কান্দিলি ইনস্টিটিউট বলছে ৬.৯ মাত্রার ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বলছে, মাত্রা ছিল ৬.৬।
তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াট অকটে জানিয়েছেন, ‘ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ধসে পড়া ভবনগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। এই ভূমিকম্প শুধু মানুষ নয় ভবনগুলোকেও নাড়িয়ে দিয়েছে।’ উল্লেখ্য, ভূতাত্ত্বিকভাবে তুর্কি উপকূল ভূমিকম্পপ্রবণ। ১৯৯৯ সালে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটির ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।